বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ১১:২২ অপরাহ্ন
বশির আহম্মদ, বান্দরবান প্রতিনিধি:: বান্দরবানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন- মানরুম পাড়ার সংপুর ম্রো (৪১), সংরিং ম্রো (৬) ও কাইকেউ ম্রো (১৮)। এ নিয়ে ৭ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১১ জনে।
এদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আংচং ম্রো (৭০), মেনলে ম্রো (৫) ও রেপং ম্রোকে (১৫) বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও সেনাসুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) থেকে রবিবার পর্যন্ত আলকিদম উপজেলার দূর্গম কুরুকপাতা ইউনিয়নের তিনটি পাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৮ জন মারা যায়। আক্রান্ত হয় আরও শতাধিক মানুষ। দূর্গম এলাকা হওয়ায় যাতায়ত ব্যবস্থা না থাকার কারণে ও সঠিক চিকিৎসার অভাবে এ পর্যন্ত ১১ জন মারা যায়। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হেলিকপ্টারে করে ঔষধপত্র বিশুদ্ধ খাবার পানি পৌছে দেয় এবং আক্রান্তদের চিকিৎসা প্রদানে সেখানে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরী করে।
এদিকে মঙ্গলবার মানরুম পাড়ায় আক্রান্ত আরো দুজনের মৃত্যু হয় এরা হল- সংপুর ম্রো ও সংরিং ম্রো। বুধবার সকালে মারা যায় কাইকেউ ম্রো নামে আরও এক পাড়াবাসী। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এ নিয়ে মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়। পরে আরো তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাদেরকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
কুরুকপাতা ইউপির ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার কাইংক্য ম্রো জানান, বুধবার সকালে মাংরুং পাড়ায় কাইকেউ ম্রো (১৮) নামে আরও একজন মারা যায়।
এর আগে মঙ্গলবার আরো দুজন মারা যায়। আক্রান্ত এখনো ৫০ জনের মত রয়েছে। সেনাবাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগের ডাক্তাররা আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।
বান্দরবান সেভেন ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মোট ১১ জন মারা গেছে। আশঙ্কাজনক ৩ জনকে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসা হয়েছে সদর হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেয়া হবে। আক্রান্ত এলাকায় সেনা সদস্যরা কাজ করছে সেখানে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরী করা হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের সাথে সেনাবাহিনীর চিকিৎসকরা তাদের সেবা দিচ্ছে। খাবার পানি স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরন বড়ি সরবরাহ করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রনে এসেছে।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে দূর্গতদের সকল ধরনের সহায়তার জন্য ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ৬৯ পদাতিক ব্রিগেড সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর যেকোন আপদকালীন সময়ে তাদের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে আসছে এটি তারই একটি দৃষ্টামতমূলক উদাহরণ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভবিষ্যতেও পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী সহ সকল জাতি ও ধর্মের মানুষের পাশে থেকে তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদের যে কোন প্রয়োজনে সর্বদা নিরলস ভাবে কাজ করে যাবে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার থেকে আলিকদম উপজেলার দূর্গম কুরুকপাতা ইউনিয়নে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে ৪ দিনে আক্রান্ত হয়ে ৮ জন মারা যায়।